তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি ॥ ভোলার তজুমদ্দিনে শাশুড়ির সহযোগিতায় রাতের আধাঁরে এক লম্পট গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩১ জুলাই ধর্ষিত ওই নারী বাদী হয়ে তজুমদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। উল্টো ধর্ষিতাকে মামলা করার পরামর্শ দেয়ায় চাঁচড়া ইউপির সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ উল্যাহ ও তার দুই ছেলে মোঃ সোহেল ও শিবলুর নামে ২৭ জুলাই থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নম্বর ৯২৫। এক সন্তানের জননী ধর্ষিত ওই গৃহবধূ উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়াডের্র প্রতিবন্ধী রিপনের স্ত্রী। ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, “২৫ জুলাই রাত ৮ টার দিকে আমি ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় পার্শ্ববর্তী এলাকার ফয়েজ উদ্দিন ওরফে ফজলু হঠাৎ ঘরে ঢুকে আমাকে জড়িয়ে ধরে ও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় আমি ডাক-চিৎকার করতে চাইলে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় আমি ডাক-চিৎকার করলেও পাশের ঘরে থাকা আমার শাশুড়ি বের হয়নি। পরে আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে ফজলু পুনঃরায় আমার ঘরে ঢুকে পালিয়ে থাকে। এরপর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি তখন চিৎকার করে আমার শাশুড়িকে ডাকতে থাকলে ফজলু বলে তোর শাশুড়ি আসবে না। এরপর ফজলু ধর্ষণ করে চলে যায়। পরে রাতে শাশুড়িকে বিষয়টি জানানোর জন্য বারবার তাকে ডাকলেও সে সাড়া দেয়নি। সকালে তাকে জানালে শাশুড়ি আমাকে পাশের গ্রামের শাহিনের নামে অভিযোগ করার জন্য চাপ দেয়। আমি রাজি না হলে ধর্ষণের সময় আমার পরিহিত ছেড়া জামা-কাপড় শাশুড়ি ঘর থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য
ব্যক্তিদের বিষয়টি জানালে তারা থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। এরপর আমি ৩১ জুলাই ধর্ষিত ওই নারী বাদী হয়ে তজুমদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ”।
ধর্ষিতার মা আমেনা বেগম ঘটনা শুনার পরই মেয়ের কাছে চলে আসেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার ২ দিন পর ফজলু তার বাড়িতে এসে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চেষ্টা করলেও তাতে তারা রাজি হননি। অভিযুক্ত ফজলু জানান, আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র। মোহাম্মদ উল্যাহ ও তার ছেলেরাসহ এসব মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছি।
নাম গোপন রাখা শর্তে এলাকার একটি সূত্র দাবি করেন, ফজলু মেঘনার জলদস্যু নিহত বাচ্চু বাহিনীর সেকেন্ড ইনকমান্ড হিসেবে কাজ করতেন। সে তজুমদ্দিন থানার বিস্ফোরক আইনের একটি মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামী ও চেক জালিয়াতির মামলায় ৬ মাসের দন্ডভোগ করে ৯লক্ষ টাকা জরিমানা দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন হান্নান জানান, ধর্ষিতা ও তার স্বজনরা ধর্ষণের বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করতে আসে। আমি তাদেরকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেই। পরে এসআই জসিমকে এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাইলে সে ধর্ষনের বিষয়টি এড়িয়ে যায়। ৩১ জুলাই অভিযোগ পেয়েই এসআই জসিম উদ্দিন খান ঘটনাস্থলে যান। ধর্ষিত নারী পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিলেও তদন্তের অজুহাতে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি। উল্টো ধর্ষিতাকে মামলা করার পরামর্শ দেয়ায় চাঁচড়া ইউপির সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ উল্যা ও তার ছেলে মো. সোহেল ও শিবলুর নামে ২৭ জুলাই থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নম্বর ৯২৫। এবিষয়ে এসআই জসিম উদ্দিন খান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়েছি, ধর্ষিতা ধর্ষনের অভিযোগ করেছেন। তবে শ্বশুড়- শাশুড়ি ধর্ষণের ঘটনা অস্বীকার করায় এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জিয়াউল হক জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নিবো।’
Leave a Reply